Logo

সাহিত্য সংস্কৃতি    >>   কান্তজিউ বিগ্রহের রাস যাত্রা শুরু

কান্তজিউ বিগ্রহের রাস যাত্রা শুরু

কান্তজিউ বিগ্রহের রাস যাত্রা শুরু

দিনাজপুরের কান্তনগর মন্দিরে শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব, যা ২৭০ বছরের পুরনো ইতিহাস ধারণ করে। প্রতিবছর জন্মাষ্টমীর দুই দিন আগে কান্তজীউ বিগ্রহ কান্তনগর মন্দির থেকে রাজবাড়ী মন্দিরে আনা হয় এবং রাস পূর্ণিমার এক দিন আগে কান্তজীউ বিগ্রহ কান্তনগর মন্দিরে নিয়ে আসা হয়।

এই ঐতিহ্য অনুসারে, আজ (১৩ নভেম্বর) সকালে কান্তজীউ বিগ্রহ রাজবাড়ী মন্দির থেকে কান্তনগর মন্দিরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। ভক্তরা রাস্তার দুই ধারে উলুধ্বনি এবং ধর্মীয় গানের মাধ্যমে বিগ্রহের পিছু পিছু হাঁটেন, আর মন্দির চত্বর উল্লাসে পূর্ণ হয়ে ওঠে। দীর্ঘ প্রায় ১৭ কিলোমিটার পথ বেয়ে বিকেলের দিকে কান্তজীউ বিগ্রহ কান্তনগর মন্দিরে পৌঁছায়, যেখানে স্থানীয় পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উপস্থিত ছিলেন।

রাস উৎসবের অংশ হিসেবে মন্দির চত্বরজুড়ে মাসব্যাপী বসে বিশাল রাসমেলা। এখানে খাদ্য, মৃৎশিল্প, ধর্মীয় পুস্তক, শাখা, সিঁদুর, চুড়ি, চারু ও কারু পণ্যসহ নানা সামগ্রী বিক্রি হচ্ছে। এই উৎসবে অংশগ্রহণকারী ভক্তদের সংখ্যা প্রতিবছরই বেড়ে চলেছে। চলতি বছরও প্রায় দুই লক্ষাধিক পুণ্যার্থী ও দেশি-বিদেশি পর্যটক উপস্থিত হবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

দিনাজপুর রাজ দেবোত্তর এস্টেটের এজেন্ট জানান,দিনাজপুর রাজবাড়ী থেকে কান্তজীউ বিগ্রহ নিয়ে যাওয়ার ঐতিহ্য ২৭০ বছরের পুরনো, দিনাজপুর রাজবংশের রাজা প্রাণনাথ ১৭২২ সালে কান্তজিউ মন্দিরের নির্মাণ কাজ শুরু করেন। ১৭৫২ সালে এর কাজ শেষ করেন তার পোষ্যপুত্র রামনাথ। তখন থেকেই সাড়ে আট মাস কান্তনগর মন্দিরে এবং সাড়ে তিন মাস দিনাজপুর শহরের রাজবাড়িতে অবস্থান করে কান্তজীউ বিগ্রহ। জন্মাষ্টমীর দুই দিন আগে ধর্মীয় উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দিনাজপুরে নিয়ে আসা হয় কান্তজীউ বিগ্রহ। কান্তনগর ঘাট থেকে দিনাজপুর শহরের সাধুর ঘাট পর্যন্ত ২৬টি ঘাটে কান্তজীউ বিগ্রহ বহনকারী নৌকাটি ভেড়ানো হয়। পূজা-অর্চনা শেষে রাজবাড়ির মন্দিরে স্থাপন করা হয় এটি। সেখানে প্রায় সাড়ে তিন মাস অবস্থান শেষে রাসপূর্ণিমার দুই দিন আগে পুনরায় কান্তনগর মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয় কান্তজীউ বিগ্রহ। জন্মাষ্টমীর আগে কান্তনগর মন্দির থেকে নৌপথে নৌবিহারে কান্তজীউ বিগ্রহ দিনাজপুরের রাজবাড়ীতে আনা হয়।

এছাড়া, রাস উৎসবের সময় কান্তনগর মন্দিরে অনুষ্ঠিত পূজা-অর্চনা এক বিশেষ ধর্মীয় গুরুত্ব ধারণ করে। এই দিনগুলিতে পূজা শেষে মন্দিরে পুণ্য অর্জনের জন্য বিভিন্ন ধরণের ধর্মীয় আচার সম্পন্ন করা হয়, যা পুরো দিনাজপুর অঞ্চলের হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে এক মিলনমেলায় পরিণত হয়।

এটি শুধু একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং এটি একটি ঐতিহ্য, যা সময়ের সাথে সাথে আরো গভীর আস্থা ও উৎসাহ নিয়ে পালিত হচ্ছে, এবং আগামী প্রজন্মেও এ ঐতিহ্য রক্ষার দৃঢ় প্রত্যয় সৃষ্টি করে।





P.S 220 Winter concert

P.S 220 Winter concert